শনিবার, ১৩ জুলাই, ২০১৯

বায়না দলিলের শর্তাবলী

বায়না দলিলের শর্তাবলী

  • রেজিস্ট্র্রেশন (সংশোধন) আইন ২০০৪ এর ১৭এ ধারার বিধান অনুসারে বায়না দলিলটি সম্পাদনের ৩০ দিনের মধ্যে রেজিস্ট্রি করতে হবে।
  • তামদি (সংশোধন) আইন ২০০৪ এর বিধান অনুসারে বায়না দলিল রেজিস্ট্রির তারিখ হতে ১ বছরের মধ্যে রেজিস্ট্রির জন্য ’বিক্রয় দলিল’ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দাখিল করতে হবে। 
  • বায়না দলিল রেজিস্ট্রির তারিখ হতে ১ বছরের মধ্যে প্রথম পক্ষ বায়না দলিলে উল্লেখিত অবশিষ্ট টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় পক্ষ আদালতের মাধ্যমে বায়না চুক্তি বাতিলের মামলা করতে পারবেন। বায়না চুক্তি বাতিল হলে প্রথম পক্ষ কর্তৃক জমির কোন উন্নয়ন করা হয়ে থাকলে তা দ্বিতীয় পক্ষের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে।
  • বায়না দলিল রেজিস্ট্রির পর ১ বছরের মধ্যে দ্বিতীয় পক্ষ বায়নাভূক্ত জমির বিক্রয় দলিল সম্পাদনে ব্যর্থ হলে প্রথম পক্ষ বায়না চুক্তিতে উল্লিখিত অবশিষ্ট টাকা আদালতে জমা দিয়ে বায়না চুাক্তি প্রবলের মামলা করতে পারবেন।
  • প্রথম পক্ষ জমির দখল গ্রহণ করতে এবং জমিতে সাইনবোর্ড লাগাতে পারবেন।
  • প্রথম পক্ষ জমিতে সাইট অফিস তৈরি ও জমির মাষ্টার প্লান তৈরি করতে পারবেন।
  • প্রথম পক্ষ জমির উন্নয়ন করতে এবং প্লট আকরে বিভক্ত করতে পারবেন।
এই বিষয়ে আরও জানতে নিচে মন্তব্য করুন বা আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন অথবা আপনার নিকটস্থ কোন আইনজীবীর কাছে পরামর্শ নিতে পারেন।


বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই, ২০১৯

উত্তরাধিকার আইন কি? ফারায়েজ অনুসারে প্রথম শ্রেণীর অংশীদারগণ কারা?

উত্তরাধিকার আইন:

উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী একজন ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয় সম্পত্তি যারা ভোগ করার অধিকারী তারাই হল উত্তরাধিকারী। সুন্নী অধ্যষিত এই দেশের মুসলিমদের বিয়ে, দেনমোহর, তালাক, হেবা, ওয়াকফ, উইল, খোরপোষ, অভিভাবকত্ব উত্তরাধিকার ইত্যাদি বিষয়গুলো মুসলিম পারিবারিক আইন ১৯৬১ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে।  এখানে কেবল মুসলিম উত্তরাধিকার আইন নিয়ে আলোচনা করা হল। হিন্দু ও খ্রিষ্টান উত্তরাধিকার আইন নিয়ে অন্য কোন সময় আলোচনা করবো।


উত্তরাধিকারযোগ্য সম্পত্তি ও উত্তরাধিকারের শেণী: 

কোন মুসলমানের মৃত্যুর পর তার ত্যাজ্য সম্পত্তি থেকে (ক) মৃত্যুশয্যাকালীন ও দাফন-কাফনের খরচ (খ) মৃত্যুর তিন মাস পূর্ব পর্যন্ত সেবা শুশ্রষার খরচ (গ) ঋণ পরিশোধ (ঘ) উইল বা দান থাকলে সে সম্পত্তি পরিশোধের পর যে সম্পত্তি থাকবে সে সম্পত্তি মৃতের রেখে যাওয়া উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বন্টিত হবে।

উত্তরাধিকার বা ওয়ারিশ: মুসলিম আইনে তিন ধরনের অংশীদার রয়েছে, দেখুনঃ

(১) প্রথম শ্রেণীর অংশীদার-কোরানী ওয়ারিশ: পবিত্র কোরানের নির্দেশ, হাদিসের ব্যাখ্যায় এবং ইজমার সমর্থনে যাদের অংশ নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে তারাই হলেন অংশীদার। এদের বলে জুল কোরান বা কোরানী ওয়ারিশ। এরা মিরাসযোগ্য ( Heritable property) সম্পত্তি হতে নির্দিষ্ট অংশ পেয়ে থাকে। এদের সংখ্যা ১২জন । এরা দু’টি সম্পর্ক হতে আগত, তা হলঃ (ক) রক্ত সম্পর্কীয় ও (খ) বিবাহ সম্পর্কীয়। এদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ এবং ৮ জন মহিলা। এরা সবার আগে সম্পত্তি পাবে। এদের মধ্যে আবার ৫ জন সম্পত্তি প্রাপ্তি হতে কখনো বঞ্চিত হবে না, তারা হলেনঃ ‍ ১ে) পিতা (২) মাতা (৩) স্বামী বা স্ত্রী (৪) কন্যা (৫) পুত্র।

প্রথম শ্রেণীর ১২ জন উত্তরাধিকারী হলেন:  
১ে) পিতা (২) মাতা (৩) স্বামী বা স্ত্রী (৪) কন্যা (৫) পুত্র (৬) পিতামহ (৭) মাতামহী (৮) পুত্রের কণ্যা (৯) পূর্ণ বোন (১০) বৈপিত্রেয় বোন (১১) বৈপিত্রেয় ভাই (১২) বৈমাত্রেয় বোন।


(২) দ্বিতীয় শ্রেণীর অংশীদার-আসাবা(রেসিডুয়ারী):

আসাবা বা অবশেষ প্রাপক (Residuary) শব্দের অর্থ অবশিষ্টাংশ ভোগী। মুসলিম উত্তরাধিকার আইনের ৬১ ধারায় অবশিষ্টাংশ ভোগী বলতে তাদের বুঝানো হয়েছে যারা সম্পত্তির কোন নির্ধারিত অংশ পান না তবে অংশীদারদের নির্ধারিত অংশ বন্টনের পর সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকলে তারা উক্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হন।

(৩) তৃতীয় শ্রেণীর অংশীদার -দূরবর্তী ‍জ্ঞাতি (সুন্নী): 

দূরবর্তী ‍জ্ঞাতি ৪ প্রকার, যথা-
(ক) অংশীদার ও অবশেষভোগী ব্যতীত মৃতের বংশধর;
(খ) অংশীদার ও অবশেষভোগী ব্যতীত মৃতের পূর্বপুরুষ;
(গ) অংশীদার ও অবশেষভোগী ব্যতীত মৃতের মাতা-পিতার বংশধর;
(ঘ) অংশীদার ও অবশেষভোগী ব্যতীত পিতামহ ও মাতামহীদের বংশধর।


ফারায়েজ অনুসারে প্রথম শ্রেণীর অংশীদারগণের ফারায়েজ নীতি

(১) পিতা: (ক) সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকলে পিতা ১/৬ (ছয় ভাগের এক) অংশ প্রাপক হবে।
(খ) মৃত ব্যক্তি নিঃসন্তান হলে পিতা ২/৩ (তিন ভাগের ‍দুই) অংশ পাবে (সন্তান বা পুত্রের সন্তান না থাকলে অপর ওয়ারিশদের প্রাপ্য অংশ দেয়ার পর পিতা অবশিষ্ট সম্পত্তির অবশেষ বা আসাবা (Residuary) প্রাপক হবে।

(২) মাতা: (ক) মৃতের সন্তান থাকলে ও ভাই বোন থাকলে ১/৬ (ছয় ভাগের এক) অংশ পাবে।
(খ) মৃত ব্যক্তি নিঃসন্তান হলে এবং ১ জনের বেশি ভাই বোন না থাকলে মাতা ১/৩ (তিন ভাগের এক) অংশ পাবে।
(গ) মৃতের সন্তান না থাকলে, ভাই বোন না থাকলে েএবং মৃত ব্যক্তি পুরুষ হলে তার স্ত্রী ও পিতার অংশ দেয়ার পর অবশিষ্ট সম্পত্তির ১/৩ (তিন ভাগের এক) অংশ মাতা পাবে।
(ঘ) মৃত ব্যক্তি স্ত্রী হলে তার স্বামীর অংশ দেয়ার পর মাতা অবশিষ্ট সম্পত্তির পিতা ১/৬ (ছয় ভাগের এক) অংশ প্রাপক হবে।

(৩) (i) স্বামী: (ক) সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকলে স্বামী ১/৪ (চার ভাগের এক) অংশ পাবে।
(খ) সন্তান বা পুত্রে সন্তান না থাকলে স্বামী ১/২ (দুই ভাগের এক) অংশ পাবে।
(ii) স্ত্রী: (ক) স্বামীর সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকলে স্ত্রী  ১/৮ (আট ভাগের এক) অংশ পাবে।
(খ) সন্তান বা পুত্রের সন্তান না থাকলে স্ত্রী  ১/৪ (চার ভাগের এক) অংশ পাবে।
(গ) স্ত্রী একাধিক থাকলে সকলে একত্রে উপরে বর্ণিত পরিমাণ সম্পত্তিই পাবে।

(৪) কন্যাঃ(ক) পুত্র না থাকলে এবং কন্যা একজন হলে  ১/২ (দুই ভাগের এক) অংশ পাবে।
(খ) পুত্র না থাকলে এবং কন্যা একাধিক হলে একত্রে ১/৩ (তিন ভাগের এক) অংশ পাবে।
(গ) পুত্র থাকলে কন্যা পুত্রের অর্ধেক অংশ (২ঃ১ অনুপাতে ) পাবে।

(৫) পুত্র: পিতা বা মাতার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে পুত্রের অংশ নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। নির্দিষ্ট অংশীদারদের অংশ দেওয়ার পর সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকবে তার পুরটাই পুত্র পাবে। মুসলিম আইন অনুসারে পুত্রের অংশ সীমাবদ্ধ করা হয়নি। তবে কন্যা থাকলে পুত্র ও কন্যা ২ঃ১ অনুপাতে সম্পত্তি পাবে।

(৬) পিতামহ:(ক) পিতা জীবিত থাকলে পিতামহ কোন সম্পত্তি পাবে না।
(খ) সন্তান ও পিতা জীবিত না থাকলে পিতামহ পিতার ন্যায়  ১/৬ (ছয় ভাগের এক) পাবে।
(গ) মৃতের কন্যা থাকলে ও পিতা না থাকলে পিতামহ  ১/৬ (ছয় ভাগের এক) অংশ পাবে।

(৭) মাতামহী:(ক) মাতা থাকলে মাতামহী বা মাতার মাতা সম্পত্তি পাবে না।
(খ) মাতা ও মাতার পিতা না থাকলে মাতামহী  ১/৬ (ছয় ভাগের এক) অংশ পাবে।

(৮) পুত্রের কন্যঃ(ক) মৃতের পুত্র, কন্যা থাকলে পুত্রের কন্যা সম্পত্তি পাবে না।
(খ) পুত্র, কন্যা, পুত্রের পুত্র না থাকলে পুত্রের কন্যা একজন হলে  ১/২ (দুই ভাগের এক) অংশ পাবে।
(গ) পুত্র/কন্যা, পুত্রের পুত্র না থাকলে পুত্রের কন্যা একাধিক হলে ১/৩ (তিন ভাগের এক) অংশ পাবে।
(ঘ) ১ কন্যা থাকলে, পুত্রের কন্যা এক বা একাধিক যাই  থাকুক একত্রে ১/৬ (ছয় ভাগের এক) অংশ পাবে।

(৯) পূর্ণ বোন বা সহোদর বোন: ক (মৃতের  সন্তান থাকলে পূর্ণ বোন বাদ যাবে মৃতের মৃত ব্যক্তির পিতা জীবিত থাকলেও বোন বাদ যাবে।
(খ) সহোদর ভাই থাকলে সহোদর বোন ভাইয়ের সাথে ২ঃ১ অনুপাতে সম্পত্তি পাবে।
(খ) পিতা, মাতা, সহোদর ভাই ও সন্তান না থাকলে বোন ১/২ (দুই ভাগের এক) অংশ পাবে। বোন একাধিক হলে একত্রে  ২/৩ (তিন ভাগের দুই অংশ) পাবে, বোন একাধিক হলে একত্রে ২/৩ (তিন ভাগের দুই) অংশ পাবে।
(গ)  সকলের অংশ দেয়ার পর সম্পত্তি অবশিষ্ট থাকলে বোন অবশেষ অংশ পাবে।

(১০) বৈপিত্রেয় বোন: (ক) সন্তান/পুত্রের সন্তান/পিতা/ পিতার পিতা না থাকলে বৈপিত্রেয় বোন ১/৬ (ছয় ভাগের এক) অংশ, একাধিক হলে একত্রে ১/৩ (তিন ভাগের এক অংশ) পাবে।
(খ) বৈপিত্রেয় ভাই ও বৈপিত্রেয় বোন সমান হিস্যায় পাবে (২ঃ১ অনুপাতে নয়)।
(গ) মৃতের সন্তান থাকলে  বৈপিত্রেয় বোন কোন সম্পত্তি পবে না।
(ঘ) মৃতের সন্তান পৌত্র, পিতা বা পিতামহ থাকলে  বৈপিত্রেয় বোন কোন সম্পত্তি পবে না।

(১১) বৈপিত্রেয় ভাই(ক) সন্তান/পুত্রের সন্তান/পিতা/ পিতার পিতা না থাকলে বৈপিত্রেয় ভাই ১ জন হলে  ১/৬ (ছয় ভাগের এক) অংশ, একাধিক হলে একত্রে ১/৩ (তিন ভাগের এক অংশ) পাবে।
(খ) বৈপিত্রেয় ভাই ও বৈপিত্রেয় বোন সমান হিস্যায় পাবে (২ঃ১ অনুপাতে নয়)।
(গ) মৃতের সন্তান থাকলে  বৈপিত্রেয় বোন কোন সম্পত্তি পবে না।
(ঘ) মৃতের সন্তান পৌত্র, পিতা বা পিতামহ থাকলে  বৈপিত্রেয় ভাই কোন সম্পত্তি পবে না।

(১২) বৈমাত্রেয় বোন (পিতা এক মাতা ভিন্ন):  (ক) সন্তান/পুত্রের সন্তান/পিতা/ পিতার পিতা/ সহোদর ভাই বা সহোদর বোন/বৈমাত্রেয় ভাই না থাকলে বৈমাত্রেয় বোন একজন হলে ১/২ (দুই ভাগের এক) অংশ, একাধিক হলে একত্রে ২/৩ (তিন ভাগের দুই অংশ) পাবে।
(খ) একজন মাত্র সহোদর বোন থাকলে  বৈমাত্রেয় বোন (এক বা একাধিব যাই হোক) ১/৬ (ছয় ভাগের এক) অংশ পাবে।
(গ) বৈমাত্রেয় ভাই থাকলে বৈমাত্রেয় ভাই ও বৈমাত্রেয় বোন ২ঃ১ অনুপাতে সম্পত্তি পাবে।
(ঘ) বৈমাত্রেয় ভাই থাকলে বৈমাত্রেয় ভাই ও বৈমাত্রেয় বোন তার সঙ্গে আসাবা হবে।

এই সম্পর্কে আপনার আরও জানার থাকলে মন্তব্য করুন বা আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।

বুধবার, ১০ জুলাই, ২০১৯

মোক্তারনামা বা পাওয়ার অব এটর্নী যেভাবে করবেন

মোক্তারনামা:
স্ট্যাম্প এ্যাক্ট ১৮৯৯ এর ২(২১) উপধারা অনুসারে যে দলিল দিয়ে কোন ব্যাক্তিকে অপর কোন ব্যক্তির পক্ষে কোন কার্য বা কোন ডিক্রি/রেজিস্ট্রি সম্পাদন/তত্ত্বাবধান ইত্যাদি কার্যাবলি সম্পাদন করার ক্ষমতা দেয়া হয় তাকে আমমোক্তারনামা বা পাওয়ার অব এটর্নী বলে। সাধারণত স্থাবর সম্পত্তি, জমি, বাড়ি, দোকান ইত্যাদি দান, বিক্রয়, হস্তান্তর রক্ষণাবেক্ষণ, বন্ধক রাখা ঋণ গ্রহণ, খাজনা প্রদান ইত্যাদি কাজে মোক্তার নিয়োগ করা হয়। অস্থাবর সম্পত্তির বিষয়েও মোক্তারনামা করা যায়।

চলুন জেনে নেই মোক্তারনামা বা পাওয়ার অব এটর্নী কত প্রকার হয়
  1. জেনারেল পাওয়ার অব এটর্নী: যে মোক্তারনামায় মোক্তারদাতার পক্ষে জমি ক্রয়-বিক্রয়, রক্ষণাবেক্ষণ, চুক্তি সম্পাদন, মামলা পরিচালনা করাসহ যাবতীয় কাজের ক্ষমতা মোক্তারকে দেয়া হয় তাকে বলে জেনারেল পাওয়ার অব এটর্নী।
  2. স্পেশাল পাওয়ার অব এটর্নী: একটি মাত্র নির্দিষ্ট বা কোন বিশেষ কাজের ক্ষমতা মোক্তারকে দিয়ে তৈরি মোক্তারনামাকে বলে স্পেশাল পাওয়ার অক এটর্নী।
মোক্তারনামার শর্তাবলী:
  • মোক্তারনামা নোটারী পাবলিক/ম্যাজিস্ট্রেট/বিদেশে সম্পাদিত হলে তা দূতাবাসের প্রতিনিধির সম্মুখে সম্পাদন করতে হবে ও তসদিক/সত্যায়ন করতে হবে।
  • মোক্তারনামা লিখিত দলিল হতে হবে।
  • মোক্তারনাম যথাযথ স্টাম্পযুক্ত হতে হবে।
  • মোক্তারনামা দাতা কর্তৃক মোক্তারকে ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।
মোক্তানামা রেজিস্ট্রিকরণ:
  1. মোক্তারদাতা তার পক্ষে কাউকে রেজিস্ট্রেশন আইনের ৩২ধারা মতে দলিল সম্পাদন ও দাখিল করার জন্য মোক্তার নিযুক্ত করে যে মোক্তারনামা তৈরি করেন তা অবশ্যই রেজিস্ট্রি করতে হবে (রেজিস্ট্রেশন আইনের ৩৩ ধারা)।
  2. মোক্তারনামা দাতার সম্পত্তি যেখানেই থাকুক দাতা যেখানে বসবাস করেন সে জেলার রেজিস্টার বা সাব-রেজিস্টারের সম্মুখে মোক্তারনামা সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করতে হবে।
  3. মোক্তারনামা সম্পাদন কালে দাদা বিদেশে বসবাসরত থাকলে তাকে নোটারী পাবলিক. আদালতের বিচারক, ম্যাজিস্ট্রেট বা বংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির সম্মুখে মোক্তারনামা সম্পাদন করতে হবে এবং তার দ্বারা মোক্তারনামাটি সত্যায়ন করতে হবে।
  4. দলিল দাতা দলিল নিজে সম্পাদন করে তা রেজিস্ট্রি অফিসে দাখিল করার জন্য ক্ষমতা দিয়ে মোক্তারনামা তৈরি করলে এরূপ মোক্তারনামা শুধু তসদিক বা সত্যায়ন করলেই চলবে। এরূপ মোক্তারনামা রেজিস্ট্রি করতে হবে না।
  5. যে সকল মোক্তারনামা রেজিস্ট্রি করতে হবে তা অবশ্যই সম্পাদনের ৩০ দিনের মধ্যে দাখিল করতে হবে {(রেজিস্ট্রেশন আইন ২০০৪ এর ১৭ এর(২) ধারা}।
  6. রেজিস্ট্রেশন আইনের ৩৩(১) ধারায় যে সকল ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রি অফিস যাওয়া হতে রেহাই দেয়া হয়েছে তারা বাড়িতে বা জেলে বসে মোক্তারনামা সম্পাদন করতে পারবে।
বাংলাদেশের বাইরে অবস্থানরত কোন ব্যক্তি মোক্তারনামা করতে চাইলে তাকে রেজিষ্ট্রেশন এ্যাক্টের ৩৩(গ) ধারা মতে বাংলাদেশ দূতাবাসে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দ্বারা মোক্তারনামাটি প্রত্যয়ন করে পররাস্ট্র মন্ত্রণালয় হতে সত্যায়ন করে নিতে হবে। এরপর দলিলটি ৩ মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের নিকট রিস্টাম্পিং এর জন্য দাখিল করতে হবে। জেলা প্রশাসক সবকিছূ যথাযত পেলে স্ট্যাম্প এ্যাক্টের ১৮ ধারা মতে বিশেষ আঠাযুক্ত স্টাম্প লাগিয়ে তা নিয়মিত বা রিস্ট্যাম্পিং করে দিবেন। পাওয়ার দলিল সম্পাদনের ৩ মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের নিকট দাখিল করতে না পারলে স্টাম্প এ্যাক্টের ৩৩ ধারা মতে সাধারণ ফিসের ১০ গুণ বেশী ফিস দিয়ে তা নিয়মিত করণ যাবে।


এবার আসুন মোক্তারনামা বাতিলের পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে নে


  • মোক্তারনামা নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য করা হলে মেয়াদ শেষে বাতিল বলে গণ্য হবে।
  • মোক্তারনামা নির্দিষ্ট কোন কার্যের জন্য করা হলে ঐ কার্য সমাপ্তিতে বাতিল হবে।
  • যৌথ ক্ষমতার মোক্তারনামা পক্ষদের একজনের মুত্যুতে বাতিল বলে গণ্য হবে।
  • মোক্তারনামা দাতা কোন মোক্তারনামা বাতিল করতে ইচ্ছুক হলে যে রেজিস্ট্রি অফিসে উহা তসদিক করা হয়েছিল সে স্থানের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের বরাবরে মোক্তারনামা রদের আবেদন করতে হবে। পূর্বকৃত মোক্তারনামাটি বিনষ্ট না হয়ে থাকলে আবেদনের সঙ্গে সেটিও দাখিল করতে হবে। এতে তিনি ‘রদ’ করা হল কথাটি লিখে দিবেন এবং সে মোতাবেক রেজিস্টার সংশোধন করবেন। রেজিস্টারিং অফিসার মোক্তারনামা বাতিলের আবেদন পাবার পর তার জেলার সকল রেজিস্ট্রি অফিসে বা অন্য কোন জেলার সদর অফিসকে বিষয়টি নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন। নোটিশ জারির ডাক টিকিটের খরচ আবেদনকারী বহন করবেন।
  • স্বার্থের সাথে যুক্ত মোক্তারনামা সার্থ পূর্ণ বা পরিত্যক্ত না হওয়া পর্যন্ত বাতিল করা যায় না।
এ সম্পর্কে আরও জানতে মন্তব্য করুন এবং জানান আপনি কোন বিষয় জানতে আগ্রহী। 

মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০১৯

নামজারি বা মিউটেশন কি? নামজারি কিভাবে করতে হয়?

মিউটেশন ইংরেজী শব্দ যার বাংলা অর্থ নামজারি  বা পরিবর্তন।  এখানে খতিয়ানে পরিবর্তিত লিপিবদ্ধ করা। ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যনুয়াল ১৯৯০ এর ২০ অনুচ্ছেদ বলে নামজারির দায়িত্ব সহকারী ভূমি কমিশনারের উপর ন্যস্ত।

নামজারির কারণ:

  • রেজিস্ট্রি দলিলগুলো হস্তান্তরের কারণে;
  • ভূমি মালিকের প্রয়াত বা মৃত্যুর কারনণে;
  • সমবায় সমিতির ক্ষেত্রে নামজারী;
  • কবলা উপহার এবং উইলের ক্ষেত্রে নামজারি;
  • দানের ক্ষেত্রে নামজারি;
  • সরকার কর্তৃক খাস জমি বন্দোবস্তের কারণে;
  • খাস খতিয়ান ভূক্তকরণের ফলে নামজারি;
  • এল এ কেসর আওতায় নামজারি;
  • স্বত্ব মামলায় রায় ডিক্রি মূলে নামজারি;
  • খাজনা অনাদয়ের কারণে জমি বিক্রয় ও সংশ্লিষ্ট নামজারী;
  • নদী সিকস্থির কারণে খাজনা মওকুফ করার কারণে;
  • সার্টিফিকেট মামলা আদালতে মামলার মাধ্যমে কোন জমি নিলাম খরিদ হলে স্বত্বাধিকার ঘোষিত হলে নামজারি করা হয়।
  • অগ্রক্রয় বা প্রিয়েমশন মামলার আশংকা থাকার কারণে নামজারি।
     আসুন জেনে নে নামজারি কত প্রকারের হয়

  1. উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তির নামজারি: কোন হোল্ডিং-এর মালিকের মারা যাবার পর তার উত্তরাধিকারীগণ নিজেদের নাম ঐ হোল্ডিং ভূক্ত করার আবেদন করেন। সহকারী কমিশনারের অফিস হতে উক্ত জমির উপর তহসিলদারের প্রতিবেদনে চেয়ে পাঠান। তহসিলদার প্রতিবেদন পাঠানোর পর যথার্থ শুনানির পর কাগজপত্র যাচাই করে নামজারির আবেদন  দিবেন। এক্ষেত্রে নতুন কোন হোল্ডিং খোলার প্রয়োজন নেই। মৃত ব্যক্তির নাম কেটে ফরায়েজ অনুযায়ী হিস্যা বন্টন করে উত্তরাধিকারীদের নাম পূর্বের হোল্ডিং ভূক্ত করবেন।
  2. রেজিস্টার দলিল মূলে নামজারি: দলিল রেজিস্ট্রির পর রেজিস্ট্রি আফিস হতে হস্তাস্তরিত নোটিশ সহকারী কমিশন (ভূমি) অফিসে প্রেরণ করেন। এই নোটিশকে এলটি নোটিশ বলে। উক্ত নোটিশ পাবার পর সহকারী কমিশন তার অফিসে একটি নামজারি কেস খোলেন । এর তদন্তের ভার তহসিলদারকে অর্পণ করে তার অফিসে পাঠান। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সরেজমিন রেকর্ড যাচাই করে, ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়েল এর পরিশিষ্ট-১৩ অনুসারে ফরম নং ১০৭৮ এ প্রতিবেদন দিবেন।
  3. আদালতের ডিক্রি প্রাপ্তিমূলে নামজারি: আদালতের ডিক্রি মূলে সরকারী খাস জমি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি নামজারী করা যায়। আদালত হতে ডিক্রি প্রাপ্তির পর উক্ত জমি পুনরায় রেজিস্ট্রির প্রয়োজন হয় না। তবে এরূপ ডিক্রি মূলে প্রাপ্ত খাস জমির নামজারির আবেদন পাওয়া গেলে একটি নামজারি মামলা ফাইল করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ মতামতের জন্য কালেক্টরের নিকট প্রেরণ করতে হবে। এ ডিক্রি একতরফা কিংবা দূতরফা সূত্রে প্রাপ্ত হলেও মতামতের জন্য কালেক্টরের নিকট পাঠাতে হবে। কালেক্টরেট বা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এরকম প্রস্তাব পাবার পর ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক এর বিধান মতে উক্ত ডিক্রিদারদের জন্য দেওয়ানী আদালতে বিবিধ কেস/আপীল/ফ্রেসস্যুট দায়ের করার ব্যবস্থা করবেন।
  4. অধিগ্রহণকৃত জমির নামজারি: কোন প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা জমি অধিগ্রহণ করলে নামজারীর জন্য তারাই আবেদন করবেন। যদি না করেন কালেক্টরের এল এ শাখা হতে অধিগ্রগ্রহণ এল এ কেসের নম্বর ও তফসিল ও তফসিল সংগ্রহ করে ঐ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানকে নিজ নামে হোল্ডিং খোলার জন্য নোটিশ দিতে হবে। এল এ শাখার ও দায়িত্ব এল এ কেসের নম্বরসহ অধিগ্রহণ সংক্রান্ত তথ্য সরকারী কমিশনার (ভূমি)র অফিসে পাঠিয়ে দেয়া। যাতে করে সংস্থা হোল্ডিং খুলে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় করতে পারেন।
  5. সার্টিফিকেট মূলে নামজারি: সার্টিফিকেট মূলে কোন স্থাবর সম্পত্তির নিলাম ক্রেতা নামজারির জন্য আবেদন করবেন। নিলামের বায়নানামা ও দখলনামার ভিত্তিতে নামজারি করা যাবে। যদি নিলাম ক্রেতা সরকার হয় তাহলে ১ ও ২ নং রেজিস্টার সংশোধন করতে হবে এবং ৩ নং রেজিস্টারের ৩য় খন্ড সংশোধন করতে হবে।
আসুন জেনে নেই নামজারির জন্য আবেদনকরীর করণীয়
জমি কেনার পর ক্রেতার সর্বপ্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হল ক্রয়কৃত জমি নিজ নিজ নামে নামজারি করে রেকর্ড সংশোধন করা। এর জন্য আবেদনকারীর করণীয় হলঃ
  • কোর্ট ফি দিয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি)র বরাবরে আবেদন করা।
  • আবেদনের সাথে জমির মালিকানা সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র সংযোজন করে দিতে হবে।
  • নামজারির জন্য কমপক্ষে ৪৫ দিন সময় হাতে নিয়ে আবেদন করা।
  • সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক নামজারির উপর শুনানীর সময় নিজ নামে হোল্ডিং নম্বর জেনে নেয়া। জমির মূল কাগজপত্র নিয়ে হাজির হওয়া এবং শুনানীতে অংশগ্রহণ করা।
  • আবেদন মঞ্জর হলে ডিসিআর এবং সংশোধিত খতিয়ান সংগ্রহ করা ২ নং রেজিস্টারে নিজ নামে হোল্ডিং জেনে নেয়া।
নামজারির আবেদন পত্রের নমুনা

ই সম্পের্কে আরও জানার থাকলে মন্তব্য করবেন। শেষে একটা কথা বলি আমদের দ্বারা আপনি উপকৃত হচ্ছন কি না তাও অবশ্যই জানাবেন।

বাটোয়ারা আইন এবং কিভাবে ভাগবন্টন করা যায়

এজমালি সম্পত্তি আইন অনুসারে প্রাপ্য অংশ নিজেরা আপোষমূলে কিংবা সালিসের মাধ্যমে বা আদালতের মাধ্যমে ভাগবন্টনের প্রক্রিয়াকে বুঝায়। মুসলিম আইন অনুযায়ী বা ফরায়েজ অনুযায়ী এজমালি সম্পত্তি সহ-শরীকদের মধ্যে সরসে নিরসে ভাগ বন্টন করে নেয়ার নামই বাটোয়ারা।

কিভাবে ভাগবন্টন করা যায়:
ইহা আদালত বা শালিসির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। যদি কোন পক্ষ এভাবে বাটোয়ারায় সম্মত না হয় তাহলে এক বা একাধিক ব্যক্তি উপযুক্ত আদালতে বাটোয়ারা মোকদ্দমা দায়েরের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পন্ন হবে। 

বাটোয়ারা আইনের সাধারণ বিষয়াবলি এবং এ সম্পর্কে উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত:

  • বাটোয়ারা একটি অধিকার: এজমালি সম্পত্তির একজন সহ-মালিক অধিকার হিসাবে উক্ত সম্পত্তির বাটোয়ারা দাবি করতে পারে। যদি কোন সহ-মালিক অধিকার হিসাবে উক্ত সম্পত্তির অত্র যৌথ সম্পত্তি বিভাজনে বন্টনে অস্বীকার করে, তখন বন্টন দাবিকারী সহ-মালিক বাটোয়ারার জন্য মামলা দায়ের করতে পারবে।
  • দখলকারকে বহিষ্কারের ক্ষেত্রে:  একজন সহ-শরীক যদি কোন যৌথ সম্পত্তির একটি সুনির্দিষ্ট অংশে দখলদার থাকে তবে তাকে বহিষ্কার করতে হলে সম্পত্তির বন্টন আবশ্যক, (পি.এল.জে-১৯০০ লাহোর পৃষ্ঠা ২৩৪)।
  • সহমালিকের একচ্ছত্র দখল: যদি কোন যৌথ সম্পত্তির একটি সুনির্দিষ্ট অংশের সম্পত্তির একটি সুনির্দিষ্ট অংশের একজন সহ-মালিক একচ্ছত্র দখলদার হয়, তবে অন্যান্য সহ অংশীদারকে তার প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। অন্যথায় বাটোয়ারার মাধ্যমে তা সরসে নিরসে বন্টন করে তার মিমাংসা করতে পারে।
  • কোন সহ-শরীক ইমারত নির্মাণের মাধ্যমে সম্পত্তির উন্নয়ন এবং সেক্ষেত্রে বাটোয়ারা:  কোন সহশরীক  ইমারত নির্মাণের মাধ্যমে সম্পত্তির উন্নয়ন করল। সেক্ষেত্রে বাটোয়ারার সময়ে এক্যুইটির নীতি অনুসৃত হয় এবং উক্ত সহশরীককে  উল্লেখিত অংশটুকু দেবার জন্য তাগিদ অনূভূত হয়।
  • বাটোয়ারায় নাবালকের অবস্থান: আদলত কোন নাবালকের সাথের্থ বাটোয়ার বাতিল করে দিতে পারেন। বাটোয়ারা ন্যায্য হলে তা নাবালকের উপর কার্যকর।
  • সহ-শরীকের বেদখলের ক্ষেত্রে:  বাটোয়ারা মোকদ্দমায় বাদী যেখানে দখলচূত, সেখানে প্রতিকার পেতে হলে বাটোয়ারা মোকদ্দমা করতে হবে।
  • স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে: স্থাবর-অস্থাবর উভয় সম্পত্তি বাটোয়ারা যোগ্য। অস্থাবর সম্পত্তি বাটোয়ারার ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন প্রয়োজন হয় না। যদি স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি  একই সাথে অন্তর্ভুক্ত থাকে এবং বাটোয়ারার দলিল রেজিস্ট্রার্ড না হয় এমনকি অস্থাবর সম্পত্তির দাবির স্বপক্ষে সমর্থনযোগ্য নয়। যদি বাটোয়ারা অস্থাবর সম্পত্তি অভিভাজ্য এবং অস্থাবর সম্পত্তি যদি আলাদা হয় সেক্ষেত্রে ভিন্ন কথা।
  • বাটোয়ারা দলিলের পক্ষ: যৌথ সম্পত্তির সকল সহ-শরীকরা বাটোয়ারার পক্ষে হবে। নাবালকের অভিভাবকগণ তাদের প্রতিনিধিত্ব করবেন। তাদের আভিভাববকদের নাবালকের উক্ত সম্পত্তিতে ন্যায্য ও ন্যায়পর হয় অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে তারা সাবালকে পৌছলে মেনে নেবে। এর বিপরীত অবস্থা দৃষ্টে উক্ত বাটোয়ার অমান্য বা ভঙ্গ করতে পারে।
বাটোয়ারা বিষয়ে আর ও জানতে মন্তব্য করুন বা আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন, আমাদের  অনেকের আইনের বিষয় সুস্পষ্ট ধারনা না থাকার কারনে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হই তাই আপনি চালে শেয়ার করে সবাইকে জানাতে পারেন।  

সোমবার, ৮ জুলাই, ২০১৯

ভূমিক্রয়ে বিশেষ ক্ষেত্রে বিশেষ করণীয়

ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হলে:
ওয়ারিশ সূত্রে যে মালিক হয়েছেন তার জমি কিনতে হলে আপনি ওয়ারিশ বিক্রেতার ফরায়েজ সার্টিফিকেট প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বাটোয়ারা দলিল ইত্যাদি পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন। মালিকানার ধারবাহিক পরিক্ষা তো  করবেনই। জমি রেজিস্ট্রি করার সময় আইনের বিধান অনুসারে সকল অংশীদারদের নোটিশ দিতে হবে। অন্যথায় অগ্রক্রয় বা সোফা যা প্রয়েমশন এর আশংকা থেকে যাবে। আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোন ওয়ারিশের নাম ওয়ারিশানের ওয়ারিশ সার্টিফিকেট ভুল বশতঃ অথবা অসচেতনতার ফলে অথবা যে কোন কারণে বাদ পরে না যায়। ওয়ারিশান বা এজমালি সম্পত্তি ক্রয় করলে অপরাপর অংশীদারদের সাফ কবলা দলিলে সাক্ষী রাখা সর্বোত্তম। এতে প্রয়েমশনসহ নানাবিধ ঝামেলার আশংকা থাকে না। এসব ক্ষেত্র্রে বিক্রেতার ফরায়েজ কৃত অংশই  করা উচিত ও নিরাপদ।

দানপত্র্র বলে মালিক:
দানপত্রসহ অপরাপর বর্ণিত প্রয়োজনীয় মালিকানার সঠিকতা যাচাই  করতে হবে। বর্তমানে দানপত্র দলিল অবশ্যই রেজিষ্ট্রিকৃত হবে। দানপত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্র তিনটি। দানকারীর  ইচ্ছা সম্বলিত প্রস্তাব, উক্ত প্রস্তাবের দান গ্রহীতার স্বীকৃত সবচে যা গুরুত্বপূর্ণ তা হল দানদাতা কর্তৃক দাগ্রহীতাকে তাৎক্ষণিকভাবে দানকৃত সম্পদ বা ভূমি দখল বুঝিয়ে দেয়া।

জরিফ রেকর্ড সূত্রে মালিক হলে:
প্রয়োজনীয় সকল পরিক্ষার সাথে রেকর্ডীয় হলে পর্চা বা খতিয়ান দেখতে হবে। খতিয়ান দাগ উল্লেখ করে হিস্যা অনুসারে উল্লেখিত ভূমির মিল দেখে নিতে হবে।

আদালতের ডিক্রি মূলে মালিক:
ডিক্রি ও বিক্রয় দলিল পরিক্ষা করতে হবে। পূর্বাপর সকল পরিক্ষা তো করতেই হবে।

নিলাম খরিদ মূলে মালিক:
নিলাম খরিদ সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র সহ নিলাম খরিদ সূত্রে দখল পেয়েছেন কিনা রেকর্ডপত্র যাচাই করে দেখতে হবে।

মালিকানা পরিক্ষা: 
বিক্রেতার মালিকানার রেকর্ড পরীক্ষা করতে হবে সিএস, এসএ ও আরএস রেকর্ডীয় খতিয়ন, নামজারী ইত্যাদি বিষয় অতি সতর্কতার সহিত ভালভাবে পরিক্ষা নিরিক্ষা করতে হবে। খতিয়ান নম্বর সঠিকভাবে ধারাবাহিকভাবে লিপিবদ্ধ আছে কিনা তা দেখতে হবে।

দখল পরিক্ষা:
সম্পত্তি বিক্রেতার দখলে আছে কিনা তা অতিব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মালিকানার সকল দালিলিক প্রমাণ  একদিকে দখল অন্যদিকে। মালিকানা ও দখল বলেই একজন ব্যাক্তি কোন সম্পত্তির প্রকৃত মালিক হবেন। বিক্রেতার জবর দখলের কারণে উক্ত সম্পত্তির উপর তার মালিকানা বিনষ্ট হয়েছে কিনা ভবিষ্যতে উক্ত সম্পত্তি ভোগ দখলে কোন বাধার সম্মুখীন হবে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে।

তথ্যসূমহ জানবেন কি ভাবে-কোথায় গিয়ে জানবেন তা জানতে মন্তব্য করুন যদি সম্ভব হয় আমরা আরেকটি পোস্ট করবো।

কোন বিষয়ে আপনি জানতে আগ্রহী হলে আমাদের জানান আমরা সেই বিষয়ে লিখতে চেষ্টা করবো।